পরিবেশ ধ্বংস ও ব্যাপক প্রাণহানির কারণে সিলেটে পাঁচ বছর ধরে পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। কোয়ারি বন্ধ থাকায় কয়েক লাখ লোক বেকার হয়ে পড়েছেন জানিয়ে আবারও পাথর উত্তোলনের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে পরিবেশবিদরা বলছেন, কোনোভাবেই প্রাণ প্রকৃতির জন্য হুমকি পাথর তোলার অনুমতি দেওয়া যাবে না। প্রশাসন বলছে, সরকার পর্যটন মহাপরিকল্পনায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টিকে।
তাদের মতে, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে কোনো শ্রমিকই বেকার থাকবে না।
অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আঁধার ‘প্রকৃতিকন্যা’ সিলেট। যে সিলেট পাহাড়-নদী, পাথর, বন আর চা-বাগানের সমন্বিত সৌন্দর্যের সুশীতল এক জনপদ। অভিযোগ উঠেছে, একটি দুষ্টচক্র পাথর উত্তোলনের নামে সেই সৌন্দর্য গিলে খাচ্ছিল দিনের পর দিন। যে কারণে পাথরঘেরা শাহ আরেফিন টিলা কঙ্কাল হয়ে আছে। চেহারা হারিয়েছে জাফলং, ভোলাগঞ্জ ও শ্রীপুরও।
শুধু তাই নয়, ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিন বছরে ৮১ জন পাথর শ্রমিক প্রাণ হারান। এমন বাস্তবতায় ২০২০ সালের ৮ জুন থেকে সিলেটের ৮টি পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিত করে সরকার। অথচ সেই প্রাণনাশি কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের সঙ্গ যুক্ত হয়েছেন পরিবহন ব্যবসীয়ারাও। তারা বলছেন, তারা বেকর হয়ে পড়েছেন। আবারও পাথর উত্তোরনের অনুমতি দিতে হবে। তা না হলে আন্দোলন বেগবান করা হবে।
পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলনের হুমকিকে পাথর ব্যবসায়ীদের ইন্ধন হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা আকতার।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা আকতার জানান,পাথর উত্তোলনে সরকারের যে পরিমাণ আয়, তার চেয়ে ক্ষতির পরিমাণ কয়েকগুন। এমন বাস্তবতায় পাথর কোয়ারি খুলে দিলে পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য তা হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
প্রশাসন বলছে, পর্যটন মহাপরিকল্পনায় পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় যেসব শ্রমিক বেকার হরে পড়েছেন, তাদের পর্যটন খাতে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে বলে জানান সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন।